বন্দর প্রতিনিধি // বন্দরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মদনগঞ্জ -মদনপুর সড়ক প্রস্তুত্ব করার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একাধিকবার মাইকিং ও নোটিশ দিয়ে গত ৮ মে অভিযান চালায়। মদনগঞ্জ -মদনপুর সড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ৮টি গুরুত্বপূর্ণ ৪ রাস্তার মোড় রয়েছে। মদনপুর, গুকুলদাশেরবাগ, ইস্পাহানি বাজার, বটতলা, দাশেরগাও, নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, বন্দর বাসস্ট্যান্ড, হাজীপুর ও ফরাজীকান্দা বাসস্ট্যান্ড। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিশাল ডাকঢোল পিটিয়ে মদনপুর হতে প্রায় ৭ কিলোমিটারের মধ্যে নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড। গত ৮ মে নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে। নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে অভিযানের পর বাকি আরো ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডে সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবে নাকি এখানেই ইতি এমনই প্রশ্ন সচেতন মহলের। নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার জন্য স্থানীয় একাধিক পক্ষ কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় কতিপয় স্বার্থন্বেশী মহলের মনের কামনা হাসিল হলেও বিশাল ক্ষতির কবলে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। চার রাস্তার মোড় চওড়া করার প্রয়োজনে উচ্ছেদ অভিযানকে প্রাথমিকভাবে সর্বস্থরের লোকজন সাধুবাদ জানালেও বর্তমানে দেখা মিলেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে উচ্ছেদ অভিযান হলে বন্দর বাসস্ট্যান্ডসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডগুলো কি চওড়া করার প্রয়োজন নেই? রেলওয়ের সম্পত্তি শুধু নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডেই। অন্য সকল স্ট্যান্ডগুলো রেলওয়ের বিশাল জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা করে দিব্বি ব্যবসা করলেও সেগুলো উচ্ছেদ নিয়ে এত গড়িমসি কেন? তথ্য মতে, নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে দুটি পক্ষ কাজ করেছে। এক পক্ষ উচ্ছেদের জন্য, অন্য পক্ষ উচ্ছেদ বন্ধ করতে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদরুপ বন্দর বাসস্ট্যান্ডের উচ্ছেদ অভিযান না করার জন্য স্থানীয় জাপা নেতা মাঈনুদ্দিন মানু, বিএনপির নেতা হান্নান সরকারসহ একটি চক্র দোকানীদের কাছ থেকে টাকা তুলে ৫ লাখ টাকা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। হাজীপুর ও ফরাজীকান্দা বাসস্ট্যান্ডে একই চিত্র। অপরদিকে গুকুলদাশের বাগ, ইস্পাহানি বাজার, বটতলা, নয়ামাটি ভাংতি, দাশেরগাও স্ট্যান্ডে কি রেলওয়ের জায়গা দখলে নেই। ওই ৪ রাস্তার মোড়গুলোতে কি আদৌ উচ্ছেদ অভিযান চলবে। সরকারি সম্পত্তি দখল মুক্ত করতে শুধু নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি দিলো, অন্য স্ট্যান্ডগুলোতে উচ্ছেদ অভিযান চায় সচেতন মহল। রেলওয়ে কর্তৃক বন্দরের নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে রাস্তা প্রসস্থ করণের কাজ শুরু করেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ভাঙ্গা গড়ার ফলে রেলওয়ের দু’পাশে গড়ে তোলা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরকে প্রতিনিয়তই চরম খেসারত দিতে হয়। গত সোমবার রেলওয়ের উচ্ছেদ অভিযান চালায়। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের একজন নাজির মিয়া অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের স্টেট অফিসার বরাবরই পতিত জমি নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে থাকে। আজ একজনকে লীজ দেয় কাল অন্যজনকে লীজ দেয় এভাবে একই জমি একাধিক ব্যক্তিকে লীজ দিয়ে তারা আর্থিক ফায়দা লুটে থাকে। এরপর উচ্ছেদ অভিযানের নাটকতো আছেই। মাসে মাসে তারা মোটা অংকের মাসোহারা নেয়ার পরও নানা অজুহাত দাঁড় করে বিনা নোটিশে এসব দোকান-পাট বিনা কারণে উচ্ছেদ করে থাকে। উচ্ছেদের পর পরই তারা নতুন করে লীজের নামে মোটা অংকের সালামী নিয়ে পূণরায় লীজ দেয়। এদিকে গত সোমবার নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বুলডোজারের সাহায্যে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী ক্ষোভের সাথে জানান, এ সকল স্থাপনার জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছিল। মামলায় বাদী ছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাজির মিয়া। দে/মোকদ্দমা নং-৭১/২৩ তারিখ ১৪/৩/২৩। তিনি তার আর্জিতে এ জমির লীজকৃত এক মালিক সোহেল তার লীজ নং ৫৩৮৯ ও রেলওয়ের ডিপুটি কমিশনার শফিউদ্দিনকে বিবাদী করেন। তিনি আর্জিতে আরো উল্লেখ করেন, মদনগঞ্জ-মদনপুর সড়কের রাস্তা ৮২ ফুট চওড়া হলে ভাল হয়। তার ইচ্ছাই পূরন হলো বলে আক্ষেপ করেন একাধিক ব্যবসায়ী। বাদী আর্জিতে উল্লেখ করেন, রাস্তার পূর্ব পাশে ও পশ্চিম পাশে সরকারি জায়গা। যদি সরকারের নিতে হয় তবে উভয় পাশ থেকে নিতে হবে। লীজকৃত মালিক সোহেল জানান, আমি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। যারা বৈধ লীজপ্রাপ্ত ও লীজের খাজনা, আয়কর এবং ভ্যাট দিয়ে যাচ্ছেন তাদের যার যার প্রাপ্ত অনুযায়ী সরকার বুঝিয়ে দেয়। এছাড়া বৈধ লীজপ্রাপ্ত ভ্থমিতে যেন কোন অবৈধ অনুপ্রবেশ না করতে পারে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Leave a Reply